চট্টগ্রামের বহদ্দারহাট র্যাব ক্যাম্পে সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার পলাশ সাহার আত্মহত্যার ঘটনায় নতুন মোড়। ফরিদপুরে শ্বশুরবাড়িতে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে পলাশ সাহার স্ত্রী সুস্মিতা সাহা অভিযোগ করেন, পলাশের মা কখনও তাকে সংসার করতে দেননি এবং শুরু থেকেই তাদের দাম্পত্য জীবনে হস্তক্ষেপ করতেন।
সুস্মিতা বলেন, “আমার স্বামী খুব সৎ আর নির্লোভী ছিল। কিন্তু ওর মা ওকে ছোট ছেলের মতো নিয়ন্ত্রণ করতেন। আমাদের তিনজনের সংসারে আমি বরাবরই উপেক্ষিত ছিলাম।”
তিনি জানান, বিয়ের পর থেকেই শাশুড়ির একচ্ছত্র আধিপত্যে সংসারে নিজেকে অচেনা মনে হতো। “ও কী খাবে, কী পরবে, কখন ঘুমাবে—সব সিদ্ধান্ত নিতেন ওর মা। আমি যেন কোথাও ছিলামই না।”
ঢাকার শান্তিনগরের ভাড়াবাড়ির অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে তিনি বলেন, “আমি নিজে থেকে বলেছিলাম, গ্রাম থেকে আসা মাকে মাস্টার বেড দিই, যাতে উনি স্বাচ্ছন্দ্যে থাকতে পারেন। কিন্তু এরপর থেকেই আমাদের মধ্যে দূরত্ব বাড়তে থাকে।”
সুস্মিতা আরও বলেন, “আমি আমার শাশুড়িকে খুব যত্ন করতাম—তার নখ কাটা, চুলে তেল দেয়া, এমনকি কাপড় পর্যন্ত পছন্দ করে দিতাম। ভাবতাম, ভালোবাসলে একদিন না একদিন উনিও বুঝবেন। কিন্তু তা হয়নি।”
তিনি অভিযোগ করেন, শাশুড়ি কেবল তার ছেলের জন্য রান্না করতেন, তাদের দু’জনকে কখনো একসাথে সময় কাটাতে দিতেন না। “আমার স্বামী অফিস থেকে ফিরেই মায়ের সান্নিধ্যে থাকত। আমি বোঝার চেষ্টা করতাম, কিন্তু দিনের পর দিন কিছুই বদলায়নি,” বলেন সুস্মিতা।
গত ৭ মে সকালে চট্টগ্রামের র্যাব-৭ কার্যালয়ে পলাশ সাহার গুলিবিদ্ধ মরদেহ পাওয়া যায়। পুলিশ ধারণা করছে, পারিবারিক কলহের জেরেই আত্মহত্যা করেছেন তিনি। তার সুইসাইড নোটে লেখা ছিল, “আমার মৃত্যুর জন্য মা এবং বউ কেউ দায়ী না… কাউকে ভালো রাখতে পারলাম না… বউ যেন সব স্বর্ণ নিয়ে যায়… মায়ের দায়িত্ব দুই ভাইয়ের উপর… দিদি যেন কো-অর্ডিনেট করে।”
Leave a Reply